উত্তরের প্রবেশদ্বার সবুজ চায়ের সমাহার
হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমানার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের শেষ প্রামেত্ম প্রাকৃতিক সৌর্ন্দযের লীলাভূমি পঞ্চগড় জেলা। বৃটিশ শাসনামলে এ জেলাটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার অমর্ত্মগত ছিল। ১৯১১ সালে জলপাইগুড়ি জেলা একটি পূর্ণাঙ্গ থানা হিসাবে আত্নপ্রকাশ করে। ঐ সময়ে থানাটির সদর দপ্তর বর্তমান পঞ্চগড় সদর উপজেলার জগদল নামক স্থানে অবস্থিত ছিল। পরবর্তীতে পরিবেশ ও যোগাযোগের সুবিধার্থে জগদল হতে থানা সদর দপ্তরটি স্থানামত্মর করে করতোয়া নদীর তীরে অবস্থিত বর্তমান স্থানে স্থানামত্মর করা হয়। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর পঞ্চগড় থানাটি দিনাজপুর জেলার ঠাকুরগাঁও মহকুমার অমত্মর্ভূক্ত করা হয়। জনতার দীর্ঘদিনের দাবীর প্রেক্ষিতে ১৯৮০ সালে ১ জানুয়ারি ঠাকুরগাঁও মহকুমার পাঁচটি থানা তেঁতুলিয়া, পঞ্চগড় সদর, আটোয়ারী, বোদা ও দেবীগঞ্জ নিয়ে পঞ্চগড় মহকুমা সৃষ্টি হলে এ মহকুমার সদর দপ্তর পঞ্চগড় থানায় স্থাপিত হয়। ১৯৮৪ সালের ১ ফেব্রম্নয়ারি পঞ্চগড় মহকুমা জেলা হিসাবে ঘোষিত হয়।
বহুল প্রচলিত মত এই যে, এ অঞ্চলে পাঁচটি গড়ের সুস্পষ্ট অবস্থানের কারণেই পঞ্চগড় নামটির উৎপত্তি। ‘‘পঞ্চ’’ (পাঁচ) গড়ের সমাহার ‘‘পঞ্চগড়’’ নামটির অপভ্রংশ ‘‘পঁচাগড়’’ দীর্ঘকাল এই জনপদে প্রচলিত ছিল। রাজনগড়, মিরগড়, ভিতরগড়, দেবেনগড় ও হোসেনগড় নামের পাঁচটি গড়ের সমন্বয়ে গঠিত পঞ্চগড় জেলায় রয়েছে আরো কয়েকটি গড়, যেমন-বোদেশ্বরীগড়, বাংলাচন্ডীগড়, লক্ষীরগড় ইত্যাদি।
পঞ্চগড় জেলার তিনদিকেই ১৮৩ মাইল বেষ্টিত বাংলাদেশ-ভারত সীমামত্ম অঞ্চল। এ জেলার উত্তরে ভারতের দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি, দক্ষিণে ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুর জেলা, পূর্বে নীলফামারী জেলা এবং পশ্চিমে ভারতের উত্তর দিনাজপুর অবস্থিত। করতোয়া, ডাহুক, মহানন্দা, তালমা, পাঙ্গা এবং চাওয়াই নদী ছাড়াও এ জেলায় অনেক পাহাড়ী নদী রয়েছে। হিমালয় অঞ্চলের শৈত্য প্রবাহের কারণে এ অঞ্চলে শীতের তীব্রতা খুব বেশী। হিন্দু ও মুসলিম ছাড়াও এ জনপদে রয়েছে রাজবংশী, কোচ, পলিয়া, সাঁওতাল, ওঁরাও এবং সুনরীদের জনবসতি।
তিন দিকে সীমামত্ম পরিবেষ্টিত ও ভৌগোলিক অবস্থানের দিক থেকে গুরম্নত্বপূর্ণ বাংলাদেশের সর্ব উত্তরের জেলা। পঞ্চগড় অঞ্চলে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পুরোটা সময়জুড়ে সংঘটিত হয় ব্যাপক গেরিলা ও সম্মুখযুদ্ধ। ৬ নং সেক্টরের অমত্মর্গত পঞ্চগড় অঞ্চলের মুক্তাঞ্চলের পরিধি ও বিসত্মৃতি ছিল বাংলাদেশের অন্যান্য মুক্তাঞ্চলের চেয়ে বেশী। পাক বাহিনীর কাছ থেকে এ জেলা সম্পূর্ণরূপে মুক্ত হয় ২৯ নভেম্বর ১৯৭১ সালে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস